বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফর রহমান খোকা। গতকাল বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় সোনালি সংসদ মাঠে বিএনপির সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ অনুষ্ঠানে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।ইতিমধ্যে এই মন্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। নিজ পছন্দের নেতার জন্য দলের প্রধানদের ঘেরাও করে রাখার ঘোষণায় সমালোচনা ছড়িয়ে পড়েছে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঝে।লুৎফর রহমান তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘শাহ আলমের (নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী) জন্য আমরা নমিনেশন আনব। প্রয়োজনে আমরা আত্মাহুতি দেব কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে। তারেক রহমান, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও বিএনপির মহাসচিবকে ঘেরাও করব। বিএনপির সর্বোচ্চ মহলকে পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, ফতুল্লাকে নিয়ে যদি কোনো ষড়যন্ত্র করা হয়, তাহলে কাউকে ছাড়া হবে না।’লুৎফর রহমান বলেন, ‘এখানে কোনো জোট চলবে না। এই খেলা আর খেলবেন না। ধানের শীষ ছাড়া ফতুল্লায় কিছু চলবে না। ফতুল্লার জনগণের আবেগ, আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ছিনিমিনি খেলবেন না। ফতুল্লার মানুষদের প্রিয় নেতা শাহ আলমকে বাদ দিয়ে এখানে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া মানেই জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।’তাঁর এমন মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনা শুরু হয় বিভিন্ন স্থানে। অনেকেই মন্তব্য করেন এই বার্তা দিয়ে বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ে অসন্তোষ এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে না মানার প্রবণতা প্রকাশ পেয়েছে। সেই সঙ্গে পছন্দের প্রার্থীকে মনোনয়ন না দিলে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে দাঁড়িয়ে যেতে পারেন নেতা-কর্মীরা সেই বার্তাও পরিষ্কার।এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মামুন মাহমুদ বলেন, ‘এইটা কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য হয়নি। এই ধরনের বক্তব্য অনভিপ্রেত। কী আর বলব, একে পাগলের প্রলাপ বলা হয়। নেতা-কর্মীদের প্রতি আমার পরামর্শ থাকবে, তাঁরা যেন সংযত ও সতর্ক হয়ে কথাবার্তা বলেন। দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে এমন কোনো কথা বলা উচিত নয়, যা নিয়ে দলের ভেতর বিতর্ক তৈরি হয়।’
নিজের মন্তব্যটি সঠিক হয়নি স্বীকার করে লুৎফর রহমান খোকা বলেন, ‘মন্তব্যটি স্লিপ অব টাং বলতে পারেন। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের প্রায় ৮০ ভাগ ভোটার বিএনপির। এখানে যদি জোটের অন্য কাউকে দেওয়া হয়, তাহলে সেটা ভোটারদের জন্য কষ্টদায়ক। বিষয়টি কেন্দ্রকে বোঝাতে গিয়ে একটু বেশি বলে ফেলেছি। এটা আমার ঠিক হয়নি। দলের প্রতি পূর্ণ আনুগত্য আমার আছে। দলের সিদ্ধান্তের প্রতি পূর্ণ সমর্থন আমার থাকবে। যেটা বলে ফেলেছি, তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। আমি প্রবীণ রাজনীতিবিদ, আশা করছি আমাদের নেতা-কর্মীরা এবং দলের কেন্দ্র বিষয়টি সহজভাবে দেখবেন।’২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির পক্ষ থেকে শাহ আলমকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সারাহ বেগম কবরীর কাছে পরাজিত হন শাহ আলম। পরবর্তীকালে ২০১৮ সালের নির্বাচনে এই আসন ছেড়ে দেওয়া হয় জোটের অংশীদার জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের প্রার্থী মুফতি মনির হোসেন কাশেমীর কাছে। তিনিও পাস করতে পারেননি
Post a Comment