প্রেসিডেন্টে প্রাসাদের কাছে ইসরায়েলের হামলা, বড় যুদ্ধের শঙ্কা

 


সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে সিরীয় সামরিক সদর দপ্তর ও প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের নিকটবর্তী এলাকায় ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সুইদা শহরে দ্রুজ যোদ্ধাদের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর চলমান সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে এই হামলা চালানো হয়, যা অঞ্চলটির নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলেছে।

সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার খবরে বলা হয়, বুধবার (১৬ জুলাই) এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ জানান, দামেস্কে সিরীয় সামরিক সদর দপ্তরের প্রবেশপথে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

এই হামলা ইসরায়েলের আগের হুমকির বাস্তবায়ন—যেখানে তারা সতর্ক করেছিল, যদি সিরীয় বাহিনী সুইদা থেকে সরে না দাঁড়ায়, তবে সামরিকভাবে জবাব দেওয়া হবে।

ইসরায়েল দাবি করছে, তারা সিরিয়ার দ্রুজ জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তার স্বার্থে এই পদক্ষেপ নিয়েছে। উল্লেখ্য, সুইদা শহরটি সিরিয়ার দ্রুজ সম্প্রদায়ের অন্যতম ঘাঁটি এবং বর্তমানে সেখানে সিরীয় সরকারি বাহিনীর সঙ্গে দ্রুজ যোদ্ধাদের ভয়াবহ সংঘর্ষ চলছে। মঙ্গলবার একপাক্ষিকভাবে ঘোষিত যুদ্ধবিরতি কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভেঙে যায়, যার ফলে পরিস্থিতি ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।দামেস্ক থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক ওসামা বিন জাভেদ জানান, তিনি নিজ চোখে সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরের সামনের ও পেছনের অংশে দুটি ড্রোন হামলা দেখেছেন। শহরের আকাশে এখনও ড্রোন চক্কর দিচ্ছে এবং সিরীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর পক্ষ থেকে গুলির শব্দও শোনা যাচ্ছে, যা সম্ভবত ড্রোন প্রতিরোধে চালানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, এই হামলা স্পষ্টভাবে দেখাচ্ছে যে পরিস্থিতি দ্রুত খারাপের দিকে যাচ্ছে। এবার হামলা পৌঁছে গেছে দামেস্কের হৃদয়ে। প্রতি মুহূর্তে উত্তেজনা বাড়ছে, সংঘাত বাড়ার আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে।’লন্ডনের কিংস কলেজের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিষয়ের প্রভাষক রব গেইস্ট পিনফোল্ড আল জাজিরাকে বলেন, ইসরায়েলের হামলা এখন পর্যন্ত মূলত প্রতীকী মাত্রায় সীমিত ছিল। তারা সচেতনভাবেই খোলা জায়গায় বা প্রতিরক্ষা একাডেমির সীমান্তবর্তী এলাকায় আঘাত হেনেছে, মূল কাঠামো ধ্বংস বা ব্যাপক হতাহত করার উদ্দেশ্যে নয়।

তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, সুইদায় ঠিক এইভাবে হামলা শুরু হয়েছিল, যা পরে ভয়াবহ রূপ নেয় এবং বহু প্রাণহানি ঘটে।

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, দামেস্কে এই হামলা হতে পারে বড় ধরনের আগ্রাসনের সূচনা মাত্র। আমরা এখন এমন এক অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছি, যেখানে ইসরায়েল যে কোনো সময় সিরিয়াজুড়ে দীর্ঘস্থায়ী, সরাসরি এবং ধ্বংসাত্মক হামলা শুরু করতে পারে।উল্লেখ্য, সিরিয়ার সুইদা শহরে সম্প্রতি সরকারপন্থী বাহিনী ও দ্রুজ যোদ্ধাদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। সংঘর্ষের সূত্রপাত দুই পক্ষের অপহরণ ও দখল-পাল্টা দখলের মাধ্যমে, যার ফলে যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হয়নি। পরিস্থিতির উত্তাপে এখন সিরিয়ার অভ্যন্তর ও সীমান্তে নতুন করে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েলের এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে আরও বড় সংঘাতের পূর্বাভাস হতে পারে।’

Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post