চিকিৎসা বাতা ও ২০% বাড়ি ভাড়া নিয়ে মন্ত্রণালায় যে তথ্য দিল



 বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা মূল বেতনের কমপক্ষে ২০ শতাংশ হারে মাসিক বাড়িভাড়া দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সরকারের কাছে।এ দাবি পূরণে কত টাকা ব্যয় হবে সে হিসাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষকদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে।মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, সার্বিক দিক পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।বুধবার সকাল থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান ও সমাবেশ কর্মসূচি পালনের পর দুপুরে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দল সচিবালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার) ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেন।শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সভাকক্ষে শিক্ষক প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন উপদেষ্টা।ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তদারকির দায়িত্বে থাকা বিভাগের মাধ্যমিক-২ শাখার উপসচিব সাইয়েদ এ জেড মোরশেদ আলী।তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শিক্ষকদের প্রতিনিধি দল মন্ত্রণালয়ে বেশ কয়েক দফা দাবি জানিয়েছে। তাদের দাবির মধ্যে অন্যতম দাবি ছিল মূল বেতনের শতকরা হারে বাড়িভাড়া ভাতা দেওয়া।”দাবি না মানলে শিক্ষকরা লাগাতার আন্দোলনে ঘোষণা দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে মোরশেদ আলী বলেন, এক পর্যায়ে তারা মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া বাবদ দেওয়ার দাবি জানান। পরে শিক্ষা উপদেষ্টা তাদের এ দাবি পূরণে কত খরচ হবে সে হিসাব কয়েকদিনের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে দিয়ে যেতে বলেছেন।এ কর্মকর্তা বলেন, “তারা এ হিসাব দিয়ে গেলে আমার তা যাচাই বাছাই করবো। তাদের মূল বেতনের শতকরা হারে বাড়িভাড়া দিতে আইন ও বিধানগুলো পর্যালোচনা করা হবে। এরপর এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন পান। তারা মূল বেতনের সঙ্গে মাসে ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া ভাতা ও ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আগে বছরে ২৫ শতাংশ হারে বছরে দুইটি উৎসব ভাতা পেলেও মে মাসে বাড়িয়ে মূল বেতনের ৫০ শতাংশ করা হয়। এর বাইরে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা বছরে মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বৈশাখী উৎসব ভাতা পান।উপসচিব বলেন, “এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ করা, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া মাসিক ১ হাজার টাকা থেকে ২ হাজার টাকা করা এবং চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা করা যায় কিনা তা পর্যালোচনা করতে আমরা (শিক্ষা মন্ত্রণালয়) অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি আধা সরকারি পত্র (ডিও) পাঠিয়েছি। ওই চিঠির জবাব পেলে এ বিষয়ে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।”সকাল থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিলেন শিক্ষকরা। দুপুর ২টার পর পর তারা সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেন। এক পর্যায়ে সচিবালয়ের ৫ নম্বর ফটকের সামনে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন তারা।এরপর শিক্ষকদের ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল সচিবালয়ে গিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরারে সঙ্গে দেখা করেন।ওই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেওয়া এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের দাবি ছিল বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ। কিন্তু সরকারের সক্ষমতাও বিবেচনা করতে হবে। সার্বিক বিবেচনায় আমরা এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের শতকরা হারে মূল বেতনের কমপক্ষে ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া দেওয়ার দাবি শিক্ষা উপদেষ্টা ও কর্মকর্তাদের কাছে জানিয়েছি৷শিক্ষা উপদেষ্টা আমাদের বলেছেন, তারা বাড়িভাড়া মাসিক ১ হাজার টাকা থেকে ২ হাজার টাকা করা এবং চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা করতে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। কিন্ত আমরা চাই মূলবেতনের শতকরা হারে বাড়িভাড়া ভাতা। পরে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেছেন তারা বিষয়টি বিবেচনা করবেন।”বৈঠকে অংশ নেওয়া এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের যুগ্মআহবায়ক ও জোটভুক্ত শিক্ষক সংগঠন বাংলাদেশ শিক্ষক ফোরাম-বিটিএফের সভাপতি মো. হাবিবুল্লাহ্ রাজু রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শিক্ষা উপদেষ্টা বলেছেন, আমাদের দাবি যৌক্তিক৷ কিন্তু তিনি সরকারের সক্ষমতার কথা বলছিলেন। শেষে তিনি আমাদের বলেছেন, সব শিক্ষক কর্মচারীকে মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া দিতে কত খরচ হবে সে হিসাবটা দ্রুত মন্ত্রণালয়কে জানাতে।“আমাদের দেওয়া হিসাবটা যাচাই-বাছাই ও পর্যালোচনা করে তারা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।”বৈঠকের পর এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা তাদের দাবি পূরণের জন্য সরকারকে এক মাস সময় বেঁধে দিয়ে রাস্তা ছাড়েন।অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, “১৪ সেপ্টেম্বর সারাদেশে প্রতিটি এমপিওভুক্ত স্কুল মাদ্রাসা কারিগরি প্রতিষ্ঠানে অর্ধদিবস কর্মবিরতি এবং ১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে।”তারপরও যদি দাবি মানা না হয়, তাহলে আরো এক মাস অপেক্ষা করে ১২ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।”

Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post