পে-স্কেল নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত



জাতীয় বেতন স্কেলের আওতাধীন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন কমিশন গঠন করা হয়েছে। তবে শিগগিরই তা ঘোষণা হচ্ছে না বলে জানা গেছে।সূত্রে জানা গেছে, ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে জোর প্রস্তুতি চালাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এজন্য আর্থিক সংকট বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচনের আগে নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণার সম্ভাবনা নেই। তবে পে-কমিশন প্রতিবেদন জমা দিলে সেই অনুযায়ী একটি বেতন কাঠামোর সুপারিশমালা চূড়ান্ত করবে সরকার। ভোটের পর নতুন সরকার ক্ষমতায় এসে তা বাস্তবায়ন করবে। অবশ্য এই নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা ও বাস্তবায়ন হওয়ার আগ পর্যন্ত সরকারি চাকুরেরা নিয়ম অনুযায়ী মহার্ঘভাতা প্রাপ্য হবেন। এমন পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে সরকারের অর্থ বিভাগ।ইতোমধ্যে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নতুন পে স্কেল ঘোষণার জন্য একটি পে কমিশন গঠন করা হয়েছে। গত ১৪ আগস্ট সেই কমিশন প্রথম সভাও করেছে। কর্মপরিধি অনুযায়ী আগামী ছয় মাসের মধ্যে সরকারের কাছে একটি প্রতিবেদন দাখিল করবে কমিশন। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী নতুন একটি বেতন কাঠামো ঘোষণা করা হবে। কিন্তু কমিশনের প্রথম সভায় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক অবস্থা। এ অবস্থায় সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করা কতটা উপযোগী তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বর্তমান বেতন কাঠামোতে ২০টি গ্রেড রয়েছে, নতুন বেতন কাঠামোতে এ সংখ্যা কমবেশি হতে পারে।এ ছাড়া অতীতের মতো বেতন বৈষম্যের কারণে কর্মচারীদের মধ্যে যেন কোনো রকম অসন্তোষ তৈরি না হয় সেদিকে কমিশনের নজর রয়েছে বলে জানা গেছে। প্রথম সভার তারিখ থেকে সময় গণনা করে পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে সুপারিশ জমা দেবে কমিশন। গত মাসের ১৪ তারিখে প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সে হিসেবে আগামী বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি কমিশনের মেয়াদ ছয় মাস পূর্ণ হবে।


এ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কমিশনকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় রাখতে বলা হয়েছে। আমাদের পরিকল্পনা হলো সময়োপযোগী একটি বেতন কাঠামো ঘোষণা করা। তবে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিও চলছে। আমরা সময় পেলে ঘোষণা করে যাব। আর সেটা নতুন সরকার এসে বাস্তবায়ন করবে।জানা গেছে, এ কমিশন সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সরকারি মঞ্জুরিপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পর্যালোচনা করে সরকারের কাছে সুপারিশ দেওয়ার কাজ শুরু করেছেন কমিশনের সদস্যরা। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের পে স্কেল অনুযায়ী সরকারি কর্মচারীদের জন্য ২০টি বেতন গ্রেড রয়েছে। প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এ পে স্কেল অনুসারে বেতন-ভাতা পান। তবে নতুন বেতন কাঠামোতে গ্রেডের সংখ্যা কমবেশি হতে পারে বলে জানা গেছে। একই সঙ্গে বর্তমান বেতন কাঠামোতে বিদ্যমান বৈষম্যগুলো নতুন কমিশনে দূর করানোর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কমিশনকে।উল্লেখ্য, সাধারণত প্রতি পাঁচ বছর পরপর নতুন পে স্কেল ঘোষণার নিয়ম থাকলেও বিগত সরকার তা বাতিল করে দেয়। এর ফলে কর্মচারীরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে সরকারি চাকুরেরা মনে করেন।

Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post